Purulia's Pakhi Pahar & Khairabera Dam

ছবি
গত পর্বের লিঙ্কঃ    https://travellingsourav.blogspot.com/2022/12/MurugumaDam-MarbleLakeUpperDam.html   চতুর্থ দিন(১৮/১১/২২)ঃ   গতকাল রাতেই আমরা ঠিক করে নিয়েছিলাম আমরা যাব আমাদের বাকি স্পট Pakhi Pahar  আর KhairaBera Dam দেখতে। সকাল সকাল স্নান সেরে প্রাতঃরাশ সেরে আমরা ৯ঃ৩০ টা নাগাদ বেড়িয়ে পড়লাম। আমরা ঠিক মত জানতাম না যে কোনটা কোন দিকে পরবে। তাই আমরা হিলটপ রোড থেকে প্রথমে নেমে এলাম নীচে। নীচে আমরা প্রথম দিনে যার হোটেলে খেয়েছিলাম তাদেরকেই জিগ্যাসা করলাম কোনটা কোন দিকে পরবে। ওনারা বললেন সামনে নেতাজী মোড় আছে। সেখান থেকে বাঁ দিকে প্রায় ১০ কিমি গেলে পরবে পাখি পাহাড়। আর ডান দিকে ১০ কিমির বেশী রাস্তা যেতে হবে তাহলে পরবে খয়রাবেরা ড্যাম। ভাল কথা, আমরা পাহাড় থেকে যখন নীচে নামছিলাম তখন বেশ কয়েকটি গুড় তৈরির জায়গা দেখতে পেলাম। তার মধ্যে আমরা ঢুঁ মারলাম দুটি জায়গাতে দেখলাম এক জায়গায় পাতলা গুড় বলল ১২০/- টাকা কেজি, পাটালি গুড় ২০০/- টাকা কেজি। আমরা দর কষাকষি করে পাতলা গুড় নিলাম ১০০/- টাকা কেজি সঙ্গে বোতলের জন্য ১০/-। এবার আমরা চললাম প্রথমে  Pakhi Pahar র উদ্দেশ্যে। নেতাজী মোড় থেকে বেড়িয়ে অনেকটা যেতে হল

Bishnupur - a part of West Bengal Tourism


পূর্ববর্তী পর্বের জন্য পাশের লিঙ্ক টি দেখুন 

https://travellingsourav.blogspot.com/2020/12/Gongoni-or-Gangani-.html
 
বেলা ১ নাগাদ আমরা গনগনি থেকে রওনা হলাম বিষ্ণুপুরের দিকে। গুগুল ম্যাপে সময় ও দূরত্ব দেখাল যথাক্রমে ৪৬ মিনিট ও ২৮ কিমি। দেখলাম রাস্তাটি বেশ ভাল। প্রায় ১ থেকে দেড় ঘণ্টা পর আমরা চলে এলাম Bishnupur। প্রথমেই চলে এলাম রাসমঞ্চ দেখতে। এখানে এসে আবার দেখি ঝামেলা। সরাসরি টিকিট দিচ্ছে না। ফেসবুকে গিয়ে Archaeological Servey of INDIA Bishnupur Sub Circle এ গিয়ে টিকিট করতে হচ্ছে। পাশেই একটি ছোট্ট বোর্ডের মধ্যে এই সংক্রান্ত নোটিশ  দেওয়া আছে। এখানে টিকিট কেটে আপনি তিনটি জায়গায় ( যে সব স্থানে টিকিট লাগে) যেতে পারেন। এই তিনটি জায়গা হল – ১ রাসমঞ্চ, ২ রাজবাড়ী ও ৩. জোড়বাংলো মন্দির। আমরা টিকিট করলাম, অন লাইনে, জন প্রতি ২০ টাকা। তবে এখানে নিজের জিনিষপত্র সঙ্গে নিয়েই ঢুকতে হল। তবে এখানে শুধু ছবি তোলা যাবে, ভিডিও একদমই করা যাবে না। অগত্যা মন খারাপ। ছবি তুললাম। রাসমঞ্চ ঘুরলাম। ভিডিও করলাম তবে লুকিয়ে। (জানিনা আপনাদের কতটা দেখিয়ে বোঝাতে পারব)। এখান থেকে বেরিয়ে পাশেই আছে একটি বড় গো শালা। 

 আসেপাশের লোককে জিগ্যাসা করলাম, এখান থেকে কোথায় যাব।একজন বললেন, আগে যান দলমাদল কামান ও ছিন্নমস্তা মন্দির দেখতে। গেলাম, দলমাদল কামান দেখলাম। একটি বড় মঞ্চর উপর কামান টি বসান, পাশেই আছে কামানের ইতিহাস। এখানে ছবিও হল, ভিডিও ও হল। পাশেই হেঁটে চললাম ছিন্নমস্তা মন্দির দেখতে। এক মিনিট ও না। জুতো খুলে ঢুকতে হল। ছবি তোলা নিষেধ। মন্দির পরিসর ও ছোট। গেটের বাইরে থেকে মন্দির সহ পুরো চত্বরটির ছবি তোলা হল। আবার একজন কে জিগ্যাসা করলাম আর কি কি দেখার আছে, তিনি বললেন বাঁ দিকে যান কালাচাঁদ মন্দির আছে দেখে আসুন। ভাল কথা, বাইক ছুটল। দুই-তিন মিনিট, কংক্রিটের রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে দেখলাম আসে পাশে তিন চারটি মন্দির। ভাবলাম এই গুলি কি? আর একটু এগোতেই ধারনা ভাঙল। এখানে একটু ভেতরে ঢুকে যেই মন্দির টি দেখলাম সেটিই কালাচাঁদ মন্দির। ভিতরে আর যাইনি, বাইরে থেকেই ফটো ও ভিডিও করলাম, বেরিয়ে এলাম। 


এইবার চললাম বাকি দর্শনীও স্থান গুলি দেখতে। বাকি বলতে শ্যামরায় মন্দির, মা মৃন্ময়ী মন্দির, জোড় বাংলো মন্দির, রাধে শ্যাম মন্দির, লাল জিউ মন্দির, মদন মোহন মন্দির ইত্যাদি। আবার আমরা চলে এলাম লালজি মন্দিরে। অনেকটা জায়গা জুড়ে দেওয়াল তার মধ্যে এই মন্দিরটি, সামনে আবার অনেকটা বড় বাগান। প্রচুর গাছ লাগান আছে। সরকার থেকে এখানে বেঞ্চ বসিয়ে দিয়েছে। বাগান পেড়িয়ে রাস্তা ধরে আমরা এগিয়ে চললাম। আবার একটা পাঁচিল পড়ল। তার ভেতর মন্দির। দেখলাম, ছবি তুললাম, ভিডিও করে বেরিয়ে এলাম।

এবার ঢুকলাম রাধেশ্যাম মন্দিরে। মন্দিরটি চারপাশ ঘুরে ছবি ও ভিডিও তুলে বেরিয়ে পড়লাম।

এবার ঢুকলাম জোড় বাংলো মন্দিরে। এখানে আপনার কাছে টিকিট দেখতে চাইবে। সেই একই টিকিট, সেভ করে রাখবেন মোবাইলে। আমি দেখাতে পারিনি, রাসমঞ্চর ছবি দেখিয়ে ঢুকে ছিলাম। পুরো মন্দিরটি দেখতে ২ – ৩ মিনিট সময় লাগল।

বেরিয়ে আমরা চললাম উল্টো দিকের মা মৃন্ময়ী মন্দিরে, এক বিশাল চত্বর, একটি বিশাল বটবৃক্ষ। আর ঢুকেই ডান হাতে মায়ের বিশাল মন্দির। পুরো মন্দিরটি দেখতে ২ – ৩ মিনিটের বেশী সময় লাগল না।

এইবার এগিয়ে চললাম মদন মোহন মন্দিরের দিকে। বেশ কিছুটা চত্তর জুড়ে মন্দিরটি। এখানে ঢুকে চারপাশে দেখে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে বেরিয়ে চললাম। তবে বেশ বুঝতে পারলাম, কেন বিষ্ণুপুর কে মন্দির নগরী বলা হয়। আর একটা কথা, আপনি এখানে গাইড নিতে পারেন, চার্জ লাগবে ৫৫০/- টাকা, তারা সব ডিটেইলসে বুঝিয়ে দেবে,সব মন্দির গুলো ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য। কাছেই আছে টোটো স্ট্যান্ড, যদিও ভাড়া আর জিগ্যাসা করা হয়নি।  


আমাদের হাতের কাছে তখনও Bishnupur এর দর্শনীও স্থানের ম্যাপ আসেনি। আমরা জানি সব দেখা শেষ। চলেছি রাতে থাকবার হোটেল খুঁজতে। অন্ধকার হতে তখনও বেশ কিছুটা বাকি। দেখলাম দেওয়ালে আছে দর্শনীও স্থানের ম্যাপ। দেখলাম তাতে বাদ গেছে দুটি জায়গা। প্রথমত লালবাঁধ, দ্বিতীয়ত মিউজীয়াম। দেখলাম প্রথমে মিউজিয়াম, ৫ টা নাগাদ বন্ধ হয়ে যায়। ছোট জায়গার মধ্যে আবার দোতলা, পাশেও আরেকটি কক্ষ আছে। দেখে বেরিয়ে চললাম লালবাঁধ দেখতে। চোখে দেখে মনে হল কয়েক বিঘার উপর এক বিশাল জলাশয়। সঙ্গে (ধারে) আবার দাঁড়ানোর জন্য জায়গা করে দেওয়া আছে। এবার ফিরে এলাম ঘর ঠিক করার জন্য। স্থানীয় কয়েক জনকে জিগ্যাসা করে জানলাম, প্রায় প্রত্যেকটি হোটেলের হাই রেট। একমাত্র দেখলাম হোটেল হেরিটেজ সহজলভ্য। দরদাম করলাম, প্রথমে ৭০০ টাকার একটি রুম দেখাল। দাম কমাতে বললে ৬০০ টাকার একটি রুম দেখাল। দেখলাম মোটামুটি। খুব একটা পরিস্কার না হলেও চলে যায়। এতে আবার geyser দেওয়া আছে। ঘরে ঢুকে ভাল করে হাত-পা ধুয়ে একটু বিশ্রাম করে বেরিয়ে পড়লাম রাতের খাওয়ার যোগার করতে।

আমাদের এই হোটেলটি ছিল চার রাস্তার মোড়ে। কাজেই খাওয়ারের দোকান গুলি ছিল সব কাছাকাছি। ডবল ডিমের তর্কা সঙ্গে ৪/৬ টি রুটি দিয়ে রাতের খাওয়ার শেষ করলাম। হোটেলে ফিরে শুয়ে পড়লাম তাড়াতাড়িই, তখন বাজে রাত ৯ঃ৩০ টা। সারা দিনের ধকলে শরীর তাখন ক্লান্ত। শোয়া মাত্রই ঘুম এসে গেল। পরদিন সকাল সকাল বেরোতে হবে যে।

ঘুম ভাঙল সকাল ৫ঃ৩০ টায়। যদিও অ্যালার্ম দেওয়া ছিল। ঘুম থেকে উঠে সকালের কাজকর্ম সেরে বেরিয়ে পড়লাম, কামার পুকুর, জয়রাম বাটির পথে। আগের দিন জেনে নিয়েছিলাম কিভাবে, কোন পথে যেতে হবে। হোটেল ছেড়ে বেরোতে বেরোতে ৬ঃ৪৫ বাজল। কিছুক্ষণ চলার পর পড়ল বিষ্ণুপুর ছাড়ার তোরন দ্বার। সূর্য সবে উঠছে। বাইকে বেশ ঠাণ্ডাই লাগছিল। ঠিক এই জায়গাতে, এই পজিশনে বেশ কিছু ফটোসুট হল। এবার যাব জয়পুরের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে।


আমাদের Bishnupur ঘোরার ভিডিওটি এখানে দিলাম অবশ্যই দেখবেন, ভালো লাগবে - 


এখানে বিষ্ণুপুরের হোটেল বুকিং করার জন্য একটি লিঙ্ক দিলাম, অনুগ্রহ পূর্বক দেখে নেবেন - 

https://www.tripadvisor.in/Hotels-g2295092-Bishnupur_Bankura_District_West_Bengal-Hotels.html

আমরা ছিলাম হোটেল হেরিটেজে তার ফোন নাম্বার ভিডিও তে দেওয়া আছে দেখে নেবেন।

এখানে বিষ্ণুপুর যাবার ট্রেন এর সময় সারণী দিলাম যাবার আগে অবশ্যই দেখে নেবেন - 

https://www.yatra.com/indian-railways/bishnupur-vsu-railway-station

পরবর্তী পর্বের জন্য এই লিঙ্কটি দেখুন 

https://travellingsourav.blogspot.com/2021/01/JoypurForest-JoyramBati-KamarPukur.html



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Tarapith Tour with Sonajhuri haat

Joyrambati & Kamar Pukur

North INDIA Tour 2007 (Part 3) - Mathra-Brindabon