Puri 2014 (Part 2)
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
যারা আগের পর্ব পরেন নি তাদের জন্য গত পর্বের লিঙ্ক এখানে দিলাম
https://travellingsourav.blogspot.com/2021/03/Puri.html
তৃতীয় দিন ( ১৪.১২.১৪)ঃ আজ সকাল ৫ঃ৩০ টা নাগাদ উঠে পড়লাম, আগের দিন রাতে কথা হয়েছিল সবাই সাইট সিন দেখতে যাব। প্রায় ৮ টা নাগাদ আমাদের হোটেল ছেড়ে সুভাস চন্দ্র চকের দিকে গেলাম। পুরীর কাছে কোন বাস ঢুকতে দেওয়া হয় না, তাই একটু দূরে যেতে হল। সকাল সাড়ে ৮ টা নাগাদ আমাদের বাস রওনা হল Konarkর দিকে। কনারকে ঢোকার আগে আমাদের বাস এসে দাঁড়াল প্রথমে চন্দ্রভাগা সিবিচ এর পাশে। আমরা প্রায় মিনিট ১০ এখানে দাঁড়ালাম। তারপর কোনারকে এসে আমরা প্রথমে জেলি/মাখন, পাউরুটি, কলা, ডিম ও মোয়া সহযোগে সকালের খাওয়ার খেলাম। এখানে ঢুকতে গেলে টিকিট কাটতে হয়, টিকিট নিল ১০ টাকা করে। গাইড সঙ্গে করে আমরা ঢুকলাম Konark সূর্য মন্দিরে। তিনি আমাদের সবকিছু বুঝিয়ে দিলেন। ভিতরে সব কিছু দেখে, ফটো তুলে আমরা বাসে ফিরে এলাম ১১ঃ৫০ নাগাদ। আমাদের বাস এবার রওনা দিল ধবল গিরির উদ্দেশে। কিছুক্ষণ পর বাস এসে পউছাল Dhawalgiriতে। পুরো সাদা একটি বৌদ্ধ স্তুপের মত দেখতে মন্দিরে উঠলাম। চারপাশের দৃশ্যও যথেষ্ট সুন্দর। সবুজে সবুজ। অনেকগুলি ফটো তুললাম। কিছুক্ষণ থেকে আবার আমরা রওনা দিলাম Udayagiri Khandagiri দেখব বলে। বাস আমাদের নিয়ে উদয়গিরি খণ্ডগিরি এলো ঠিক
২ঃ৩৫ টা নাগাদ। বাস স্ট্যান্ড থেকে আমরা কিছুটা এগিয়ে গিয়ে প্রথমে উঠলাম Khandagiri তে। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে প্রথমে পুরো শহরের দৃশ্য দেখে নিলাম। বেশ কিছুটা এপাশ ওপাশ দেখে নেমে এলাম। হাতে সময় কম থাকার জন্য Udayagiri তে আর ওঠা হল না। আমরা বাস স্ট্যান্ডে এসে মাংস ভাত সহযোগে দুপুরের খাওয়া খেলাম। এরপর বাস চলল “NandanKanan “ দেখাতে। বিকাল ৫ঃ১০ টা নাগাদ আমরা ঢুকলাম “ NandanKanan “ এ। প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময় হয়েছে। তাই আমরা মেন পয়েন্ট গুলি দেখার জন্য গাইডের সাহায্য নিলাম। সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ আমরা চিড়িয়াখানা থেকে বেরিয়ে এলাম। এবার হোটেলে ফেরার পালা। ফেরার পথে মাঝ রাস্তায় বাসের তেল ফুরিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের প্রায় ১ ঘণ্টা দেরী হয়ে গেল। আমরা সুভাষ টকে এসে যখন পউছালাম তখন প্রায় ১০ টা বাজে। সেখান থেকে অটো তে করে হোটেলে। একটা কথা বলে রাখা ভাল, আমরা এই যে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গেলাম তার ব্যয় কিন্তু আমাদেরই বহন করতে হল।
আমি একটা জিনিস দেখলাম ও শুনেছিও যে পুরী তে যারা বেড়াতে নিয়ে আসে তারা শুধু ট্রেন ভাড়া, হোটেল ভাড়া ও খাওয়া খরচা ছাড়াও station থেকে নিয়ে আসা ও পৌঁছে দেওয়ার খরচাটাই নেয়। বাকি সব খরচাটাই আমাদের নিজেদের। কারন, অনেকে ঘুরতে যেতে চায় না। অনেকে এখানে আসে সময় কাটায় এই জন্য।
চতুর্থ দিন (১৫.১২.১৪)ঃ আজ আমাদের Puriর মন্দির দেখতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগের দিন দেরিতে ফেরার কথা মাথায় রেখে সেটি একদিন পিছিয়ে দেওয়া হল। আজ টিফিন দিয়ে দিল সকাল সকাল। খেয়ে নিয়ে সোজা সমুদ্র দেখতে চলে গেলাম। কিছুক্ষণ পর ফিরে এলাম, দেখি অনেকে বলছে মন্দির দেখতে যাবে, কিন্তু আজ কোন পুজ দেবেনা আর ভিতরেও যাবে না। তাই ঠিক করা হল হেঁটে যাওয়া হবে। আমরা আমাদের হোটেল থেকে
বেরিয়ে সবাই অলি
গলি দিয়ে যেতে থাকলাম। এই ভাবে আমাদের মন্দিরে পৌছাতে সময় লাগল প্রায় ৩০ মিনিট মত।
কথা মত বাইরে থেকে দর্শন করে আবার ফিরে এলাম হোটেলে।ফেরার পথে একবার কাকাতুয়া-র দোকান
টা দেখে এলাম। দেখলাম একই নামে ২ টো দোকান আছে।
এবার সমুদ্রে যাওয়ার পালা। সবাই একসাথে দল বেঁধে হাসি মজা করতে করতে চললাম স্নান
করতে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে স্নান করলাম। জলে থাকলে কিভাবে যে সময় কেটে যায় বোঝা যায়
না। এবার উঠে চললাম হোটেলে। আবার স্নান সেরে খেয়ে নিলাম। আজ যাওয়া হবে জগন্নাথ দেবের
মাসির বাড়ী, পিসির বাড়ী, সোনার গৌরাঙ্গ, শ্বশুর বাড়ী এই সব জায়গায়। এই সব জায়গায় অনেকক্ষণ
কাটিয়ে আমরা সোজা চললাম পুরী মন্দির দর্শনে। কারন প্রতিদিন মন্দিরের মাথায় পতাকা লাগান
হয়। দেখলাম প্রায় ১০ মিনিট ধরে পতাকা লাগান চলল। ফেরার পথে Puriর প্রসিদ্ধ খাজা কিনে
নিয়ে ফিরলাম। রাত ৮ঃ৩০ টা নাগাদ কয়েক জন মিলে বেরলাম কিছু জিনিস পত্র কিনব বলে। আমি
নিজের জন্য স্মারক হিসাবে একটি জগন্নাথ দেবের একটি মন্দির কিনলাম। রাত সোয়া ১০ টা নাগাদ
রাতের খাওয়ার খেয়ে শুয়ে পড়লাম।
পঞ্চম দিন (১৬.১২.১৪)ঃ আজ সকাল ৫ঃ৩০ টা নাগাদ উঠে সোজা চলে গেলাম বীচের ধারে। উদ্দেশ্য সান রাইস দেখব। বেশ হাওয়া দিচ্ছে। ভালই ঠাণ্ডা লাগছে। দেখলাম মাঝিরা তখন মাঝ সমুদ্র থেকে মাছ ধরে পাড়ে এনে পর্যটক দের বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছে। সকাল প্রায় ৬ঃ১০ টা নাগাদ সমুদ্রের মাঝে অর্ধেক সূর্যের দেখা পেলাম। সেখান থেকে পুরো সূর্য উঠতে আরও মিনিট ৫ সময় নিল। ঠিক এই সময় খেয়াল করলাম, সূর্যটা দেখতে ঠিক কমলা লেবুর মত লাগছিল। আর সেই লালাভ বর্ণ সমুদ্রের জলে পড়ে চিকচিক করছিল। সকাল সকাল বেশ কতগুলো ফটো তুলে ফিরে এলাম হোটেলে। আজ জগন্নাথ দেবের দর্শনের জন্য মন্দিরে যাওয়ার কথা ছিল। আগে থেকে পাণ্ডা ঠিক করা ছিল। সময় করে আমরা চললাম Puriর মন্দির দর্শনে। আমরা গিয়ে পউছালাম সাড়ে ৭ টা নাগাদ। যেই পাণ্ডা আমাদের সাথে ছিলেন তিনি প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে আমাদের ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখালেন। এরপর আমরা চলে এলাম হোটেলে। আজ পুরী তে আমাদের শেষ দিন। আর
কয়েক ঘণ্টা পরেই ঘর খালি করে দিতে হবে। তাই দুপুরে খাওয়ার পর কয়েকজন মিলে গেলাম সমুদ্রের ধারে। দুপুর, বালি বেশ গরম। তাই, বেশ কিছুক্ষণ থেকে আমরা চলে এলাম হোটেলে। এবার বেশ কিছুক্ষণ বিশ্রাম। ব্যগ গোছান অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। একটু বিকাল পরতেই সবাই একবারে বেরিয়ে পড়লাম। আমাদের যিনি নিয়ে এসেছিলেন তিনি আগে থেকেই গাড়ী বুক করে রেখেছিলেন। ঠিক সময় মত গাড়ী চলে এলো। আমরাও চললাম…… বাই বাই পুরী………
পুরীতে বিভিন্ন মানের ২৩৭ টি হোটেল বুকিং করতে গেলে পাশের লিঙ্কটি দেখুন -
https://www.makemytrip.com/hotels/puri-hotels.html
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন