Visakhapatnam or Vizag – Travel guide Part 2
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
পূর্ববর্তী পর্বের জন্য এই লিঙ্ক টি দেখুন -
https://travellingsourav.blogspot.com/2021/04/Visakhapatnam.html
দ্বিতীয় দিনঃ আজ ২৮ শে ডিসেম্বের, সোমবার। আজ থেকে আমাদের প্রকৃত ভ্রমণ শুরু হল। ভোর ৫ঃ৩০ টা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে পড়লাম। হাত মুখ ধুয়ে ৭ টা নাগাদ জলখাওয়ার খাওয়া হল, ৮ টা নাগাদ আমরা রওনা হলাম আমাদের প্রথম গন্তব্য “Borra Caves” এর উদ্দেশে। বাসে করে আঁকা বাঁকা পাহাড়ি পথ ধরে যেতে বেশ ভয়ই করছিল। বিশেষ করে যখন উপরে উঠছিল এবং সাইডের পাঁচিলের কাছাকাছি গিয়ে যখন স্পীড বাড়াচ্ছিল তখন। আমাদের হোটেল থেকে বোরোকেভ যেতে সময় নীল প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা। বাস যেখানে থামিয়ে দিল সেখান থেকে আবার ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে বোরোকেভ-এর গেট পর্যন্ত এগিয়ে দেওয়ার জন্য অন্য গাড়ী লাগল। কিন্তু বলতে গেলে এটা আমাদের ফালতু গেল। এখানে এসে আবার টিকিট কাটার পালা। প্রাপ্ত বয়স্ক দের জন্য ৩০ টাকা ও ১৩ বছর পর্যন্ত বয়সীদের জন্য ২৫ টাকা করে টিকিট নিল। এছাড়াও রিলের ক্যমেরা ও মোবাইল ক্যমেরার জন্য ২৫ টাকা ও ডিজিটাল ও ভিডিও ক্যমেরার জন্য ১০০ টাকা করে চার্জ নেওয়া হল। ভেতরে গিয়ে প্রথমেই চোখে পড়ল আশেপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য। ক্যমেরা বন্দি হল কিছু দৃশ্য। এরপরেই চলে এলাম
Borra Caves এর একদম সামনে। সেখান থেকে ধীরে ধীরে ভীতরে নামতে লাগলাম। এটি সম্পূর্ণ ভাবেই একটি প্রাকৃতিক গুহা। আর মধ্যে রাস্তা আবার দুটি আছে, একটি চলে গেছে একদম নীচে, আরেকটি উপরে। আমি প্রথমে নীচে নামলাম। যাওয়ার পথে দুটি পাথরের মুখ এমন ভাবে হয়ে আছে, যেখান দিয়ে দুই জনে একসাথে যাওয়া আসা করা যায়না। মাথা কিছুটা নিচু করে চলাফেরা করতে হয়। চলাফেরার সুবিধার জন্য মাঝে মাঝেই লাইটের ব্যবস্থা রয়েছে। ফটো তুলতেও সুবিধা হচ্ছে। গুহার উপরের অংশে ছিল কিছু পাথরের মূর্তি ও পাথরের প্রতিমা। এই অংশের রাস্তাটিও ছিল খুব খাঁড়াই। গেলাম Borra Caves গুহার একদম শেষ প্রান্ত পর্যন্ত, কিন্তু দেখার বিশেষ কিছু ছিলনা। আমাদের যে গাইড ছিল সে তার মুখস্ত করা বুলি আওরে যেতে লাগল। আমরা এখানে ছিলাম প্রায় দেড় থেকে ২ ঘণ্টা র কাছাকাছি। আমরা বেরিয়ে হেঁটে হেঁটে নীচে নেমে এলাম, যেখানে বাস দাঁড়িয়ে ছিল।এখানে আমরা
কিছু খেয়ে নিলাম। এবার আমরা চললাম কফি বাগানের দিকে। কিছুক্ষণ পরে চলে এলাম কফি বাগানে।
দেখলাম পাহাড়ের ধাপে ধাপে কফি ফলে রয়েছে। যে সব কফি কাঁচা সেগুলি সবুজ রঙের, আর যে
সব কফি পাকা সেগুলি বাদামী রঙের। কফি দেখতে দেখতে আমরা পাহাড়ের অনেকটা উপরে উঠে গিয়েছিলাম
কখন যে মনে নেই। এবার নামার পালা। নামতে নামতে বেশ কয়েকবার পা হড়কে গেল। দেখলাম অনেক
বাঙালী পর্যটক এসেছেন। কফি বাগান থেকে আমরা চললাম “পদ্যপুরম গার্ডেন” দেখতে।
প্রায় মিনিট ১৫ পরে আমরা গার্ডেনে পউছালাম। তেমন খুব একটা আহামরি কিছু নয় দেখলাম। এপাশ ওপাশ ঘুরে প্রায় আধা ঘণ্টা কাটিয়ে আমরা চললাম আমাদের পরবর্তী গন্তব্য আদিবাসী মিউজিয়াম দেখতে।
এই বাগান
থেকে বাসে উঠে আমাদের যেতে সময় লাগল মাত্র ৫ মিনিট মত। মিউজিয়াম-এর ভিতর ঢুকে দেখলাম,
statue করে আদিবাসীদের জীবন কাহিনী বর্ণিত আছে। এখানে বেশ কিছুক্ষণ থেকে প্রায় সন্ধ্যা
৬ টা নাগাদ রওনা হলাম আমাদের হোটেলের জন্য।
আসার সময় দেখলাম, পাহাড়ের গায়ে কোন বাতি নেই। পুরোটা পথই অন্ধকার। যেসব গাড়ী গুলো যাওয়া আসা করছে, তারা সবই তাদের লাইটেই পথ দেখে যাচ্ছে। এমনিতেই অন্ধকার, তারপর বাস চালাচ্ছে জোরে, দেখেই গায়ে ভয়ে কাটা দিয়ে উঠল। এই ভাবে এক পাহাড় থেকে আর এক পাহাড়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলার পর, বাস সমতলে এসে পউছাল। এরপর আরও ১ ঘণ্টা চলার পর আমরা পউছালাম আমাদের হোটেলে। দেখলাম যেই হোটেলে আমরা খাই সেই হোটেলে বিশাল বড় লাইন। আমি হোটেলে ঢুকে, ফ্রেশ হয়ে, বেরিয়ে এলাম খাওয়ার জন্য। তখনও লাইন লেগে আছে। গেলাম অন্য আরেকটি হোটেলে। খেয়ে, হেঁটে প্রায় সাড়ে ১০ টা নাগাদ শুয়ে পড়লাম।
তৃতীয় দিনঃ আজ মঙ্গলবার, ২৯ শে ডিসেম্বের। বেলা ৬ঃ৩০ টা নাগাদ ঘুম ভেঙ্গে গেল। কিছুটা সময় এদিক ওদিক করে কাটিয়ে দিলাম। সকালে আমাদেরই জনা দুই চারেকের সঙ্গে দেখা হল, ঠিক করলাম বীচে যাব। তবে টিফিন খেয়ে নিয়ে। টিফিন খেয়ে বাইরে বেরলাম। নতুন একজন স্থানীও লোকের সাথে পরিচয় হল। উনি ওনার গাড়ী ভাড়া দেন, ট্যুরিস্ট দেড় সাইট সিন ঘুরিয়ে দেখানর জন্য। প্রথমে ১,৫০০/- বললেও পরে রফা হল ১,২০০/- তে। উনি আমাদের ৩ টি স্পটের কথা ঘুরিয়ে দেখাবেন বললেন, সময় লাগবে প্রায় ৫ ঘণ্টা মত। আমরা বেলা ৯ টা নাগাদ রওনা হলাম।
আমাদের সর্ব প্রথম গন্তব্য হল “ Dolphin's Nose Light House ”। আমাদের হোটেল থেকে প্রায় ৪৫ মিনিট যাওয়ার পর আমরা পউছালাম লাইট হাউসে।এন্ট্রি ফি নিল বড়দেড় জন্য ১০ টাকা আর শিশুদের জন্য ৩ টাকা ও ক্যমেরার জন্য চার্জ নেয় ২৫ টাকা। আমাদের বলা হয়েছিল এটি সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৩-৪,০০০ ফুট উপরে। সেখান থেকে চারপাশে যতদূর দেখা যায়, বাড়ী ঘর, গাছপালা, কারখানা সবই একদম ছোট ছোট লাগছিল। এখানে প্রবেশের সময় বিকাল ৩ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত। কিন্তু এখানে যিনি ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন তিনি বাঙালী হওয়ায় আমাদের ১০ টা র সময়তেই গেট খুলে দিয়েছিলেন। এখানে আমরা প্রায় ২০-২৫ মিনিট ছিলাম। দেখলাম আরও অনেক বাঙালী পার্টিরা এখানে আসছেন। এবার আমরা এখান থেকে বেরিয়ে পড়লাম, আমাদের দ্বিতীয় গন্তব্বের উদ্দেশে।
আমাদের দ্বিতীয় গন্তব্য ছিল “Brookfield Beach”। লাইট হাউস থেকে বেরিয়ে আমাদের এখানে আসতে সময় লাগল প্রায় ১৫ মিনিট মত। এখানে নতুন করে তৈরি করা হয়েছে বাথ্রুম, খাবার ঘর ইত্যাদি এবং নিরাপত্তা জনিত ব্যপার ও আছে। এই সব কিছু নিয়ে আমাদের এন্ট্রি ফি নিল মাথা পিছু ১০ টাকা। এখানে এসেই স্নানের জামা কাপড় পরেই সমুদ্রে ঝাঁপ।অনেকক্ষণ ধরেই স্নান পর্ব চলল। একপাশের পাহাড় এসে সমুদ্রে মিশেছে। সবাই মিলে খুব মজা করলাম। প্রায় ২ আড়াই ঘণ্টা সমুদ্রে কাটিয়ে দিলাম।
আমাদের আজকের
তৃতীয় গন্তব্য ছিল “Durga Temple”। এখানে
দেখার তেমন কিছুই নেই। এটি একটি ভিউ পয়েন্ট মাত্র। এখানে মন্দিরের বাইরে থেকে ডক দেখা
যায়। দূরে কর্মী দেখতেই কেমন লিলিপুট এর মত লাগছিল। দেখলাম দুটি মালবাহী জাহাজ আসছে।
সেগুলিকে আনতে গিয়েছে এবার দুটি ছোট ছোট মোটর বোট। একটা জিনিস আরও দেখতে পেলাম, সমুদ্রে
তেল ভেসে বেরাচ্ছে। এবার ডক এর অপর পাড়ে দেখলাম মাটি কাটা হচ্ছে, যাতে জাহাজ বিনা বাধায়
ঢুকতে পাড়ে। এখানে আমরা গাছের ছায়ায় প্রায় দেড় ঘণ্টা মত কাটালাম।
এখান থেকে
সোজা চলে এলাম আমাদের হোটেলে। তখন বেলা প্রায় ২ টো বাজে। স্নান সেরে সোজা হোটেলে চললাম
মাংস ভাত খেতে। খেয়ে এসে ঘুম। বিকালে বেশিরভাগ লোকই গেল মার্কেটিং করতে। আমি ঠিক করতে
পাড়লাম না কি কিনব, তাই একজনের সাথে হাঁটতে হাঁটতে আধ ঘণ্টা পরে পউছালাম সেই রামকৃষ্ণ
বীচে। যখন পউছালাম তখন বাজে সন্ধ্যা ৬ টা। এরপর আরও পৌনে এক ঘণ্টা ধরে হাঁটাহাঁটি করলাম।
তারপর অটো ধরে সোজা হোটেলে। একটা ভাল জামা কাপড় বাইরে রেখে, পুরনো জামা কাপড় সব গুছিয়ে
নিলাম। পরের দিন আবার একটু দূরে ঘুরতে যাব। আজ রাতের খাওয়ার হিসাবে আমরা খেলাম রুটি
তর্কা। খাওয়া শেষ হল ১০ টা নাগাদ। একটু হাঁটাহাঁটি করে হোটেলে ফিরে সোজা বিছানায়।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে যে সব ট্রেন বিশাখাপত্তনম যায় সেই ট্রেন গুলির নাম এখানে দিলাম -
করমণ্ডল এক্সপ্রেস, হাওড়া-মাদ্রাস মেল, ফলকনামা এক্সপ্রেস, ইসট কোস্ট এক্সপ্রেস, গুরুদেভ এক্সপ্রেস, থিরুছুড়াপল্লী এক্সপ্রেস, যসবন্তপুর এক্সপ্রেস এই গুলি ছাড়াও কিছু সাপ্তাহিক ট্রেন ছাড়ে। বিশদ বিবরণের জন্য রেলের ওয়েব সাইট দেখুন।
পরবর্তী পর্বের জন্য এই লিঙ্ক টি দেখুন -
https://travellingsourav.blogspot.com/2021/04/SimhachalamTemple-Zoo-RushikondaBeach-Kailasagiri-VMRDAINSKursuraSubmarine.html
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন